টাঙ্গাইলের পাঁচটি পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থীরা বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। টাঙ্গাইল পৌরসভায় এসএম সিরাজুল হক আলমগীর, ভূঞাপুর পৌরসভায় মাসুদুল হক মাসুদ, মির্জাপুর পৌরসভায় সালাম আক্তার শিমুল, সখীপুর পৌরসভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হানিফ আজাদ আর মধুপুর পৌরসভায় সিদ্দিক হোসেন খান বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
টাঙ্গাইল পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী এস এম সিরাজুল হক আলমগীর ৬৬ হাজার ৬১৭ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপির মনোনিত প্রার্থী মাহমুদুল হক সানু পান ২২ হাজার ৯০০ ভোট। সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ.এইচ.এম কামরুল হাসান এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
সখীপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হানিফ আজাদ টানা তৃতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি নৌকা প্রতীকে ৭ হাজার ৮৩৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র সানোয়ার হোসেন সজিব জগ প্রতীকে পেয়েছেন ৭ হাজার ৫৪৪ ভোট আর ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী পেয়েছেন ৫১২।
মির্জাপুরে নৌকা প্রতীকের সালমা আক্তার শিমুল ১২ হাজার ৪৭৮ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপি শফিকুল ইসলাম ২৯২৪ ভোট পেয়েছেন।
ভূঞাপুরে নৌকা প্রতীকে আওয়ামীলীগ প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়ে মেয়র পদে হ্যাট্রিক করলেন মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মাসুদুল হক মাসুদ। তিনি ৯৪১৩ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপির মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের জাহাঙ্গীর হোসেন পেয়েছেন ৪৪১৩ ভোট আর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুস সাত্তার জগ প্রতীকে পেয়েছে ৩৭০১ ভোট।
মধুপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সিদ্দিক হোসেন খান। নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ২৫ হাজার ৯৯২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আব্দুল লতিফ পান্না পেয়েছেন ১ হাজার ৬৫১ ভোট।
তবে এর আগে দুপুর আড়াইটায় বিএনপি মনোনিত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল লতিফ পান্না মধুপুর উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, দামপাড়া ও মধুপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্র বাদে অবশিষ্ট ১৫ টি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের পোলিং এজেন্টরা সাধারণ ভোটারদের নিকট থেকে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে নৌকা প্রতীকে সীল দেন। কোথাও কোথাও তাদের সামনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করেন। কর্মীদের মারপিট করা হয়। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারদের নিকট অভিযোগ দিয়েও এসবের কোন প্রতিকার না পেয়ে রিটার্নিং অফিসার বরাবর প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করে পুনঃনির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, নয়টি ওয়ার্ডের ১৭টি কেন্দ্রে ৪১ হাজার ৬০০ জন ভোটারের মধ্যে ২৭ হজার ৬৪৩ জন ভোটার ভোট দেন। শতকরা ভোট পড়েছে ৬৭ ভাগ।
উল্লেখ্য, পাঁচটি পৌরসভা নির্বাচনে ১৩ জন মেয়র প্রার্থী, ২২১ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ৭৯ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৯১ টি কেন্দ্রের ৬৩৩টি ভোট কক্ষে সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচনে ১৪ প্লাটুন বিজিবি, ১০ টি র্যাবের টিম, ৫ টি পৌরসভার ৫ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ৫৪টি ওয়ার্ডে ৫৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, স্টাইটিং টিম, মোবাইলটিমসহ পর্যাপ্ত পরিমান আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন।