ফ্যাসিস্টের দোসর ও অনিয়মের অভিযোগে বিচার কাজ থেকে বিরত রাখা ১২ বিচারপতির মধ্যে এখনও চারজনের বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল।
আজ শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান পদত্যাগপত্র জমা দেন। সেই পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি ৭ সেপ্টেম্বর গ্রহণ করেন বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ‘দলবাজ, দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টের দোসর’ বিচারকদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। ১৫ অক্টোবর রাতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের তৎকালীন সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম হাইকোর্ট ঘেরাওয়ের ডাক দেন। পরদিন শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থান নেন। একই সময়ে বৈষম্যবিরোধী আইনজীবীরাও বিচারপতিদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে তৎকালীন রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা (বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি) শিক্ষার্থীদের সামনে এসে জানান, ১২ বিচারপতিকে কোনো বেঞ্চ দেওয়া হবে না, ফলে তারা বিচারকার্যে অংশ নিতে পারবেন না।
এরপর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে নিয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়। সংবিধান অনুযায়ী, এই কাউন্সিল বিচারপতিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠায়।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, অভিযুক্ত বিচারপতিদের মধ্যে বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিন ২০২৫ সালের ৩০ জানুয়ারি পদত্যাগ করেন। বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলন অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আর নিয়োগ পাননি। বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খান ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস অবসর গ্রহণ করেছেন।
এছাড়া সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের তদন্তের পর রাষ্ট্রপতি বিচারপতি খিজির হায়াতকে গত ১৮ মার্চ এবং বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে গত ২১ মে অপসারণ করেন। সর্বশেষ বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে।
বর্তমানে বাকি চার বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।