শরীর সুস্থ রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। তবে যদি শরীরে কোনো সমস্যা থাকে, বিশেষ করে কিডনির সমস্যা, তাহলে খাদ্যতালিকায় বিশেষ মনোযোগ দিতে হয়। কিডনির রোগীদের জন্য কিছু খাবার বিপজ্জনক হতে পারে, বিশেষত যেগুলোতে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে।
কিডনির প্রধান কাজ হচ্ছে শরীরের পটাশিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা। পটাশিয়াম আমাদের দেহের পেশির সংকোচন, স্নায়ুর কার্যকারিতা এবং হৃদস্পন্দন ঠিক রাখতে সহায়তা করে। তবে, কিডনি রোগীদের জন্য অতিরিক্ত পটাশিয়াম বিপজ্জনক হতে পারে।
কিডনির রোগীদের জন্য বিশেষভাবে বিপজ্জনক দুটি ফল হলো নারকেল ও কলা। এই দুটি ফলেই উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে, যা কিডনি রোগীদের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে।
একটি মাঝারি আকারের কলায় থাকে ৩৭৫-৪৮৭ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, যা কিডনির রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। নারকেলের পানি এবং শাঁসেও রয়েছে প্রচুর পটাশিয়াম, যা কিডনির সমস্যা থাকা ব্যক্তির জন্য অস্বাস্থ্যকর হতে পারে। এই দুটি ফল একসঙ্গে খেলে পটাশিয়াম শরীর থেকে বের হতে না পেরে রক্তে জমে যেতে পারে, যা হাইপারক্যালেমিয়ার মতো মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
কিডনির সমস্যা মূলত তখন দেখা দেয় যখন কিডনি শরীর থেকে পটাশিয়াম বের করতে অক্ষম হয়। এতে রক্তে পটাশিয়ামের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়ায়। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, কিডনি রোগীদের এসব ফল একসঙ্গে অথবা অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়, কারণ পটাশিয়ামের পরিমাণ অতিরিক্ত হলে তা শরীরের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে।
পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, এমনকি সামান্য পরিমাণে এসব ফল খাওয়াও কিডনি রোগীদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কিডনি রোগীরা যতই কম পরিমাণে খাবার খান না কেন, তাদের জন্য কোনো ফলের পটাশিয়ামের পরিমাণ নির্ধারণ করা কঠিন। তাই, কিডনির সমস্যায় ভোগা রোগীদের জন্য নারকেল এবং কলা একসঙ্গে খাওয়া থেকে বিরত থাকা সবচেয়ে নিরাপদ।
কিডনি রোগীদের অনেক সময় উপসর্গ স্পষ্ট হয় না এবং চিকিৎসা নেওয়ার আগেই শরীরে ক্ষতি হতে পারে। তাই, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী কিডনি রোগীরা এসব ফল এড়িয়ে চললেই ভালো।